কোশ-গহ্বর বা ভ্যাকুওল (Vacuole)
সংজ্ঞা :-
⏩ সজীব কোশের সাইটোপ্লাজমে, স্থানে স্থানে, আবরণ পরিবেষ্টিত যে সকল সাইটোপ্লাজমবিহীন স্থান অর্থাৎ গব্বর থাকে, তাদের ভ্যাকুওল বা কোশ-গহ্বর বলে।
গঠন (Structure)
⏩ ভ্যাকুওল দেখতে ছোটো-বড়ো গহ্বরের মতো। এদের নির্দিষ্ট কোনো আকার থাকে না। গহ্বরগুলি একটি সূক্ষ্ম আবরণ দ্বারা পরিবৃত থাকে, গঠন অনেকটা কোশপর্দার মতো। গহ্বরের মধ্যে বিশেষ করে উদ্ভিদকোশের গহ্বরে একপ্রকার জলীয় পদার্থ থাকে, যাকে কোশ-রস অর্থাৎ সেল-স্যাপ (cell sap) বলে।
⏩ প্রাণীকোশের ভ্যাকুওলগুলি আকারে খুব ক্ষুদ্র এবং সংখ্যায় কম থাকে। অনেক সময় প্রাণীকোশের ভ্যাকুওল দেখা যায় অপরিণত উদ্ভিদকোশে ভ্যাকুওলের সংখ্যা অনেক এবং আকারের ক্ষুদ্র। পরিণত উদ্ভিদকোশে ভ্যাকুওলগুলি একত্রিত হয়ে একটি বড়ো ভ্যাকুওল সৃষ্টি করে, ফলে নিউক্লিয়াসসহ সাইটোপ্লাজম কোশপ্রাচীরের ভিতরের দিকে পরিধি বরাবর বিন্যস্ত থাকে। ভ্যাকুওলকে বেষ্টন করে সাইটোপ্লাজমের এরূপ বিন্যাসকে প্রাইমরডিয়াল ইউট্রিকল (primordial utricle) বলে।
কাজ (Function)
⏩ খাদ্য সঞ্চয়, ক্ষরিত পদার্থ সঞ্চয়, রেচন পদার্থ বর্জ্য পদার্থ সঞ্চয় দূরীকরণ প্রভৃতিতে ভ্যাকুওল সহায়তা করে। এককোশী-মূলরোমের ভ্যাকুওল আন্তঃ সহায়তা করে। কাজ অনুযায়ী এককোশী প্রাণীদের নিম্নলিখিত কয়েক প্রকারের হয়, যেমন—
(i) খাদ্য গহ্বর (Food vacuole) : এককোশী প্রাণীরা ফ্যাগোসাইটোসিস পদ্ধতিতে যখন কঠিন খাদ্য গ্রহণ করে, তখন সাইটোপ্লাজমে খাদ্য গহ্বর গঠিত হয়। এই গহ্বরে তাদের খাদ্য পরিপাক হয়।
(ii) রেচন গহ্বর (Excretory vacuole) : কোশের বিপাকীয় দূষিত পদার্থ যে সকল গহ্বরে সঞ্চিত হয়, তাদের রেচন গহ্বর বলে।
(iii) জল গহ্বর (Water vacuole) : জলে বসবাসকারী এককোশী প্রাণীদের (অ্যামিবা) কোশপর্দা পিনোসাইটোসিস পদ্ধতিতে যখন জল গ্রহণ করে, তখন সাইটোপ্লাজমে জল গহ্বরের সৃষ্টি হয়।
(iv) সংকোচি গহ্বর (Contractile) :যে সকল রেচন গহ্বর বা বর্জ্য পদার্থ (waste product) সঞ্চয়কারী গহ্বর সঙ্কোচনশীল, তাদের সংকোচী গহ্বর বলে গহ্বরগুলি সঙ্কোচন-প্রসারণের সাহায্যে কোশের পরিধির দিকে এসে ফেটে যায় বা সূক্ষ্ম নালীর মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থটিকে কোশের বাইরে নির্গত করে।
Nice
ReplyDelete