⏩ ভৌমজল কাকে বলে ?
✴️ ভূ-অভ্যন্তরে কিংবা মৃত্তিকা, রেগোলিথ এবং শিলারন্ধ্রে যে জল অবস্থান করে, তাকে ভৌমজল বলে।
⏩ ভৌমজলের প্রধান উৎস হল
🔸বৃষ্টি ও তুষারগলা জল। বৃষ্টিপাত ও তুষারগলা জলের সামান্য অংশ পৃথিবীর অভিকর্ষজ টানে মাটির মধ্য দিয়ে ভূ-অভ্যন্তরে অপ্রবেশ্য স্তর পর্যন্ত পৌঁছোয় এবং অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের ওপরে মৃত্তিকা ও শিলারন্ধ্রকে সম্পূর্ণ সম্পৃক্ত করে রাখে।
⏩ ভৌমজলের গুরুত্ব
👉 মানবজীবনে ভৌমজলের গুরুত্ব অপরিসীম
1. পানীয় জলের উৎস: ভৌমজল মানুষের পানীয় জলের প্রধান উৎস। গভীর ও অগভীর নলকূপ, কুয়ো থেকে আমরা পানীয় জল সংগ্রহ করি। প্রস্রবণের মধ্য দিয়ে নির্গত ভৌমজলও পানীয় হিসেবে অনেক সময় ব্যবহৃত হয়।
2. কৃষি ও শিল্পকর্মের প্রসার: বহু অঞ্চলে ভৌমজলের সঞ্চয় নির্ভর কৃষিকাজ ও শিল্পকাজ গড়ে ওঠে। পশ্চিমবঙ্গের বহু স্থানে গভীর ও অগভীর নলকূপের মাধ্যমে ভৌমজল উত্তোলন করে বহু ফসলি শস্যের উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।
3. ভূতাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন: উষ্ণ প্রস্রবণ ও গিজারের উত্তপ্ত -ভৌমজলকে কাজে লাগিয়ে ভূতাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।
4. জনবসতি স্থাপন :প্রস্রবণ থেকে নির্গত ভৌমজল জনবসতি গড়ে উঠতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পশ্চিমবঙ্গে শুশুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশ থেকে প্রাপ্ত প্রস্রবণের জল ওই স্থানে জনবসতি গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে।
5. পশুদের পানীয় জলের জোগান: চুনাপাথর গঠিত অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠ শুষ্ক প্রকৃতির। এই অঞ্চলের তৃণই প্রধান উদ্ভিদ। পশুপালনের জন্য প্রয়োজনীয় পানীয় জল এই অঞ্চলে গঠিত ভৌমজলের ভাণ্ডার থেকে সংগ্রহ করা হয়।
⏩ গুরুত্ব হিসেবে অতিরিক্ত পয়েন্টগুলি দ্যাখো—
🔸রোগ নিরাময় গুণ: চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে উষ্ণ প্রস্রবণের জলে কিছুকিছু রোগ নিরাময়কারী উপাদান থাকে। তাই ওইসব স্থানে মানুষের সমাগম বাড়ে।
🔸পর্যটন শিল্পের প্রসার: চুনাপাথর গঠিত অঞ্চলে কিছু বিশেষ ধরনের ভূমিরূপ গঠিত হয় যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। ফলে ওই অঞ্চলে বা স্থানে পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠে।
🔸মরূদ্যানের সৃষ্টি: মরু অঞ্চলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে বায়ুর দ্বারা বালুকারাশি অপসারিত হলে ভৌমজলপীঠ উন্মুক্ত হয়। যার ফলে মরূদ্যান সৃষ্টি হয় যা মানুষের চাষের কাজে ও বসতি স্থাপনে সাহায্য করে।
🔸নদীর জলের উৎস: নিত্যবহ নদীর জলের একটি উৎস হল প্রস্রবণ। পানীয় প্রস্তুতের কাঁচামাল নরম পানীয় প্রস্তুত করতে বা খনিজ জল তৈরিতে ভৌমজল কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।