ভারতের ইতিহাসের ভৌগলিক উপাদান থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর|question from Geographical Elements of Indian History- Karmadishari



প্রশ্ন . হিমালয় কীভাবে ভারতীয়দের সংস্কৃতিচর্চায় সাহায্য করেছে।

✔️হিমালয় ভারতীয়দের সংস্কৃতিচর্চায় সাহায্য করেছে দু'ভাবে - 

(ক) হিমালয় থেকে নির্গত নদনদী উত্তর ভারতের বিশাল সমভূমিকে উর্বর করায় ভারতবাসী কঠোর জীবনসংগ্রাম থেকে মুক্তি পেয়েছে।

(খ) হিমালয় বিদেশি আক্রমণ থেকে ভারতবাসীকে রক্ষা করে নিশ্চিন্তে সংস্কৃতিচর্চার সুযোগ দিয়েছে।



প্রশ্ন . কোন্ কোন্ জনগোষ্ঠীর সংমিশ্রণে ভারতের জনগোষ্ঠী গঠিত?


✔️বিভিন্ন ঐতিহাসিক, ভাষাবিদ ও নৃতাত্ত্বিক এ সম্পর্কে নানা অভিমত প্রকাশ করেছেন। একেবারে সাম্প্রতিক অভিমত হল, ছ'টি জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে ভারতের জনগোষ্ঠী গঠিত হয়েছে। সেগুলি হল— নেগ্রিটো, প্রোটো-অস্ট্রোলয়েড, মঙ্গোলয়েড, মেডিটেরিনিয়ান, পশ্চিম রচিসিফেল এবং নর্ডিক


প্রশ্ন . প্রাচীন যুগ থেকে আমাদের দেশ কী কী নামে পরিচিত হয়েছে?


✔️ব্রাক্ষ্মণ ঐতিহ্যে এই দেশের নাম 'ভারতবর্ষ'। বৌদ্ধ সাহিত্যে এই দেশকে বলা হয়েছে 'জম্বুদ্বীপ'। মধ্যযুগে 'হিন্দুস্তান' নামে পরিচিত হলেও বর্তমান এবং আধুনিক যুগে এই দেশের নাম 'ভারত' বা 'ইন্ডিয়া'।



প্রশ্ন . ভারতের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমের গিরিপথগুলির গুরুত্ব কী?


(ক) ভারতের উত্তর-পশ্চিমের গিরিপথগুলি বিদেশি জাতিগুলির যাতায়াতের মাধ্যমে পশ্চিম এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার সঙ্গে একসময় কৃষ্টিমূলক ও রাজনৈতিক সম্পর্ককে গভীর করে তুলেছিল।


(খ) এই পথগুলি দিয়ে যুগে যুগে বিভিন্ন বিদেশি জাতিগোষ্ঠী ভারতে অভিযানও চালিয়েছিল। 


(গ) উত্তর ভারতের গিরিপথগুলি দিয়ে বৌদ্ধধর্মের প্রচারকগণ বিদেশে গিয়েছিলেন বৌদ্ধধর্মের প্রচারের উদ্দেশ্যে।



প্রশ্ন . ভারতের বিখ্যপর্বতমালার অবস্থান দাক্ষিণাত্যের জীবনে কী প্রভাব ফেলেছিল?


✔️বিন্ধ্যপর্বতমালার অবস্থানের ফলে দাক্ষিণাত্যে এক স্বতন্ত্র সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, যা ছিল আর্যসভ্যতার প্রভাব থেকে মুক্ত। এই পর্বতমালা তাদের স্থিতিশীল ব্যাবসাবাণিজ্যে অগ্রগতি ঘটাতে সাহায্য করেছিল। তাদের স্বাতন্ত্র্য এক পৃথক ও বৈশিষ্ট্যময় সমাজ, সভ্যতা ও রাষ্ট্রনীতি গড়ে তুলতে উৎসাহিত করে।





প্রশ্ন . ভারতের প্রাচীন যুগের ইতিহাস রচনা কঠিন কেন?


✔️কর্নেল টড, ঐতিহাসিক ফ্রি বেশি পণ্ডিতীয়দের বিযুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন যে, ভারতীয়গণ বিজ্ঞানসম্মত রীতিতে ইতিহাস রচনায় দক্ষ ছিলেন না। প্রাচীন নরপতিগণ তাদের সভাকবিদের নিজ নিজ কীর্তিকাহিনি রচনা করার জন্য উৎসাহিত করতেন, কিন্তু তাঁদের রচনা প্রশত্তি, উপমা এবং অভির গুনের বাহুলো প্রকৃত ইতিহাস হয়ে উঠত না। এজন্য প্রাচীন যুগের ইতিহাস রচনা কঠিন কাজ।




প্রশ্ন . ভারতের ইতিহাসের উপাদান কোন্ কোন্ গ্রিক রচনা থেকে পাওয়া যায়?


✔️উত্তর-পশ্চিম ভারতে পারস্য অভিযানের কথা আমরা হেরোডোটাসের গ্রন্থ থেকে জানতে পারি। আলেকজান্ডারের ভারত অভিযান সম্পর্কে জানতে পারি প্লুটার্ক, ডিয়োডোরাসের গ্রন্থ পড়ে। মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকা' থেকে মৌর্য যুগের ইতিহাসের উপাদান পাই।



প্রশ্ন . ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতা কোটি, এ প্রশ্ন নিয়ে পণ্ডিতরা বিভ্রান্ত কেন?


✔️১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনের 'দি জিওগ্রাফিক্যাল জার্নাল' পত্রিকায় “এ সার্ভে অফ এনসিয়েন্ট সাইটস অ্যালং দি লস্ট সরস্বতী রিভার" নামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন স্যার অরেলস্টাইন। এই রচনায় তিনি তিন হাজার বছর আগে হারিয়ে যাওয়া, সরস্বতী ও তার উপত্যকায় হরপ্পার চেয়েও প্রাচীন এক সভ্যতার অস্তিত্বের ইঙ্গিত দেন। সম্প্রতি 'স্যাটেলাইট ইমেজিং'-এর সাহায্যে সেই হারিয়ে যাওয়া নদীরেখা ও সভ্যতার অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গেছে। পণ্ডিতরা তাই বিভ্রান্ত।



প্রশ্ন. প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের উপাদানগুলিকে কী কী ভাগে ভাগ করা হয়?

✔️প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের উপাদানগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।


(ক) লিখিত বা সাহিত্যগত উপাদান।

(খ) প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান।

(গ) ভাষাভিত্তিক উপাদান।



প্রশ্ন . 'ভারতবর্ষ" নামের উৎপত্তি কীভাবে হয়?


✔️উত্তরটি বিতর্কিত। অনেকের মতে 'ভরতগোষ্ঠী' নাম থেকে ভারতবর্ষ নামের উৎপত্তি। আবার অনেকে মনে করেন মহাভারতের দুষ্মন্তপুত্র রাজা ভরতের নাম থেকে "ভারতবর্ষ" নামের উৎপত্তি।



প্রশ্ন  . 'মিলিন্দ পঞ্চহো' কী?


✔️ব্যাকট্রীয়রাজ মিনান্দার নাগসেনের দ্বারা বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হন। তিনি নাগসেনকে কিছু প্রশ্ন করেন এবং নাগসেন তাঁর উত্তর দেন। এই প্রশ্নোত্তরের সংকলন 'মিলিন্দ পঞ্চহো" বা "মিলিন্দার প্রশ্ন" নামে পরিচিত।



প্রশ্ন . ভারতবর্ষকে 'আর্যাবর্ত' বলা হয় কেন?


✔️প্রাচীন আর্যরা ভারতবর্ষের উত্তরাংশে বসতি স্থাপন করেছিল বলে ভারতবর্ষকে আর্যাবর্ত বলা হয়। বস্তুত, আর্য সংস্কৃতির প্রাধান্যের জন্য সমস্ত দেশ 'আর্যাবর্ত নামে পরিচিত হয়।



প্রশ্ন . কৌটিল্য কে ছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম কী?

✔️অনুমান করা হয়, কৌটিল্য ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের প্রধান পরামর্শদাতা। তাঁর আসল নাম ছিল বিষ্ণুগুপ্ত

কৌটিল্য রচিত গ্রন্থের নাম 'অর্থশাস্ত্র'।



প্রশ্ন . মেগাস্থিনিস কে ছিলেন? তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম কী ?

✔️মেগাস্থিনিস ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজসভায় প্রেরিত একজন গ্রিকদূত। তিনি আলেকজান্ডারের সেনাপতি সেলুকাস কর্তৃক প্রেরিত হন। মেগাস্থিনিসের লেখা গ্রন্থের নাম 'ইন্ডিকা'।



প্রশ্ন. " ফা-হিয়েন কে ছিলেন। তাঁর লিখিত গ্রন্থের নাম কী?

✔️ফা-হিয়েন ছিলেন একজন চৈনিক পরিব্রাজক। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের শাসনকালে তিনি ভারতে আসেন।

ফা-হিয়েন রচিত গ্রন্থের নাম 'ফো-কুয়ো-কি'।


প্রশ্ন . বাণভট্ট কে ছিলেন? তাঁর রচিত গ্রন্থ দুটির নাম লেখো।

✔️বাণভট্ট ছিলেন হর্ষবর্ধনের সভাকবি।

বাণভট্টের রচিত গ্রন্থ দুটির নাম হল 'হর্ষচরিত' ও 'কাদম্বরী'।


প্রশ্ন . হিউয়েন সাং কে ছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম কী?

✔️হিউয়েন সাঙ ছিলেন চৈনিক পরিব্রাজক। তিনি হর্ষবর্ধনের শাসনকালে ভারতে আসেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম 'সি-ইউ-কি'।


প্রশ্ন  . অলবেরুনী কে ছিলেন। তিনি কখন ভারতে আসেন?


✔️অলবেরুনী ছিলেন একজন বিখ্যাত গণিতজ্ঞ ও জ্যোতির্বিদ এবং গজনীর সুলতান মামুদের সভাসদ।

একাদশ শতাব্দীতে অলবেরুনী ভারতে আসেন।



Tags
ইতিহাস GK

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad