✔️সাধারণভাবে জাদুঘর হলো বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদানের সংগ্রহশালা যেখানে ঐতিহাসিক,সাংস্কৃতিক,বৈজ্ঞানিক,শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন সংরক্ষণ করে তা জনসাধারণের উদ্দেশে স্থায়ী বা অস্থায়ী ভাবে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। এক কথায় বিভিন্ন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করে সেগুলি যেসব প্রতিষ্ঠানে বা ভবনে সংরক্ষণ করে রাখা হয় সেসব প্রতিষ্ঠান বা ভবনকে জাদুঘর বলে।
✔️জাদুঘরের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী :-
জাদুঘরের যে সমস্ত উদ্দেশ্য বা কার্যাবলী গুলি আছে সেগুলি হল যথা —
প্রত্ন নিদর্শন সংগ্রহ : জাদুঘরের একটি প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের,বিভিন্ন যুগের,বিভিন্ন ধরনের প্রত্ননিদর্শন গুলি সংগ্রহ করে রাখা। তাই বলা যায় হারিয়ে যাওয়া অতিত দিনের এই সমস্ত নিদর্শনগুলি সংগ্রহ করে জাদুঘরে আমাদের অতীতের প্রত্ননিদর্শন কেন্দ্রিক বিষয়গুলি সম্পর্কে ধারণা দান করে থাকে।
প্রত্ন নিদর্শন সংরক্ষণ : জাদুঘর গুলি সুপ্রাচীন অতীত দিনের বিভিন্ন ধরনের প্রত্ননিদর্শন গুলো সংরক্ষন করে থাকে। যেমন — প্রাচীন মুদ্রা, লিপি,বিভিন্ন ভাস্কর্য,শিল্প কার্য,পুরাতাত্ত্বিক বস্তুসমূহ এবং বিভিন্ন মডেল চার্ট প্রভৃতি জাদুঘরে সংরক্ষিত রাখা হয়।
প্রতিকৃতি নির্মাণ : জাদুঘর গুলি বিভিন্ন প্রাচীন আধুনিক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নিদর্শনের বা ক্রিয়া-কলাপের ,বস্তুসমূহের,ব্যক্তি সমূহের মডেল নির্মাণ করে। এই মডেল জনসাধারণকে দেখানোর উদ্দেশ্যে সাজিয়ে রাখা হয়।
জনসচেতনতা গঠন : জাদুঘরে সংরক্ষিত ঐতিহাসিক,বৈজ্ঞানিক,শৈল্পিক গুরুত্বপূর্ণ প্রত্ননিদর্শন গুলির মাধ্যমে দর্শকদের মধ্যে এক সচেতনতাবোধ গড়ে ওঠে। অনেক সময় জাদুঘরে সংরক্ষিত বিষয়গুলি পন্ডিত গবেষকদের লেখার কাজে বা গবেষণার কাজে সাহায্য করে।
জ্ঞানের প্রসার : জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন প্রশ্ন নিদর্শনগুলির পাশে সেই নিদর্শন সম্পর্কিত নানা ধরনের তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে। তাই দর্শককুল জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন প্রত্ন নিদর্শন গুলি দর্শন করার পাশাপাশি এই সমস্ত তথ্য গুলি পাঠ করার সুযোগ পায়। এতে পাঠকের মনে নির্দিষ্ট প্রত্নবস্তু সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের প্রসার ঘটে।
অতীত সমাজ ও সভ্যতার ধারণা দান : জাদুঘরে যে সমস্ত জিনিস সাজিয়ে রাখা হয় সেগুলি থেকে আমরা অতীত সমাজ ও সভ্যতা সম্পর্কে সাধারণ ধারণা পেয়ে থাকি। এই বিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানব সমাজ ও সভ্যতার যে অগ্রগতি ঘটেছে তার বিভিন্ন নিদর্শন জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকে। এই সমস্ত অতীত দিনের নিদর্শনগুলি সাধারণ পাঠক,দর্শক ও গবেষকদের অজানাকে জানা ও অচেনাকে চেনার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
স্মরণীয় সংগ্রহশালা : জাদুঘরে বিশ্বের বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ও স্মরণীয় ব্যক্তিদের মূর্তি সংগ্রহশালা হিসেবে রাখা হয়। এ প্রসঙ্গে মাদাম তুসোর জাদুঘরের কথা উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও জাদুঘরে ঐতিহাসিক ভাবে স্বীকৃত রাজকীয় ব্যক্তিত্ব,তারকা,বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব, এমনকি চলচ্চিত্রের নায়ক নায়িকাদের মূর্তি সংরক্ষিত থাকে।
উপরোক্ত বিষয় গুলির মধ্যে জাদুঘরের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী নিহিত আছে।
কিছু জাদুঘরের নাম : দুটি উল্লেখযোগ্য শিল্প জাদুঘর হলো — (i) কলকাতার আশুতোষ মিউজিয়াম বা ইন্ডিয়ান আর্ট, এবং (ii) আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া মিউজিয়াম অফ আর্ট।