রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনাক্ষেত্র (Scope of Political Science)
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনাক্ষেত্রের পরিধিগত ব্যাপকতা নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে। এই মতবিরোধকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যেতে পারে, যথা-
(১) সাবেকি অভিমত -- Read more....
(২) সাম্প্রতিক অভিমত -- Read more....
(৩) মার্কসীয় অভিমত
মার্কসবাদীদের অভিমত (Marxist View)
সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে মার্কসবাদীরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা করেন। তাদের মতে, যেহেতু শ্রেণিবিভক্ত সমাজে রাষ্ট্রের সহায়তায় অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রভুত্বকারীশ্রেণি নিজেদের শ্রেণিশাসন ও শ্রেণিশোষণকে অব্যাহত রাখার জন্য সচেষ্ট হয়, সেহেতু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাই হল রাজনীতির সর্বাপেক্ষা গুৰুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। কারণ, এরূপ সমাজে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে শ্রেণিদ্বন্দ্ব বা শ্রেণিসংগ্রাম নিরন্তর চলতে থাকে। এই দ্বন্দ্বশীল সমাজে শ্রেণিগত স্বার্থরক্ষা ও উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্য প্রতিটি শ্রেণি যেসব পদ্ধতি অবলম্বন করে, রাজনীতির মধ্যে তার প্রতিফলন ঘটে। তাই লেনিন বলেছেন, বিভিন্ন শ্রেণির সঙ্গে রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্ক এবং বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যেকার সম্পর্কই হল রাজনীতি। তবে একথাও সত্য যে, মার্কসবাদীদের চোখে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা রাজনীতির প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় হলেও তা জাতিসমূহের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করে। তা ছাড়া, বিভিন্ন রাষ্ট্রের পারস্পরিক সম্পর্কও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্ত বলে মার্কসবাদী রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ মনে করেন। সুতরাং বলা যায়, রাষ্ট্রীয় কার্যে অংশগ্রহণ, রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ, রাষ্ট্রীয় কার্যের বিভিন্ন রূপ লক্ষ্য ও বিষয়বস্তু নির্ধারণকেই মার্কসবাদীরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়সূচির অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষপাতী।